মাইকেল ডি নস্ত্রাদামাস : ভবিষ্যৎ এর চেতনাধারী ও চিন্তক।


                   

                                         
এক হেমন্তের ঘটনা। সালটি ১৯৩৯ সাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কাল হিসেবে পরিচিত সালটি। জার্মানী তৎকালীন পরাশক্তি হিসেবে বেশ নামকরা এবং প্রসিদ্ধ ছিল। সেই জার্মানীর ক্ষমতাধর ব্যক্তি ছিলেন হিটলার। কিছুদিন হলো জার্মানী সেই ১৯৩৯ সনের দিকে পোল্যান্ডে আক্রমণ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ডাক দেন। তৎকালীন জার্মানদের প্রচারমন্ত্রী ছিলেন ডক্টর গোয়েবলস। পোল্যান্ড আক্রমণ করার পরের ঘটনা। কোনো এক দুপুরে প্রচার মন্ত্রী তার নিজ বাস ভবনে ঘুমাচ্ছিলেন। পাশেই তার স্ত্রী কি মনে করে কোনো এক অখ্যাত ব্যক্তির বই হাতে তুলে নিয়ে পড়া শুরু করলেন। ঠিক কয়েক ঘন্টা পর ডক্টর গোয়েবলসের স্ত্রী আচমকা চমকে উঠেন! গোয়েবলসের স্ত্রী সেই বই পড়ে এতোটাই চমকে গিয়েছিলো যে পাশে প্রচারমন্ত্রীকে ঘুম থেকে তুলে ডেকে তাকে বইটি কিছু অংশ পড়ার নির্দেশ দেন। তিনি নিজেও বইটি তখন পড়ে এতোটাই উত্তেজিত হয়ে গেলেন যে সে বইটি গড়ালো হিটলারের কাছে! সমগ্র জার্মান জুড়ে জার্মানীর সরকারের কাছে বইটির প্রতিটি লেখনী যেন এক জাদুর কাঠি আর আচমকা এক বাণী মনে হলো। এই বইয়ের জন্য ৮০,০০০ পাউন্ড ও খরচ করতে বাধ্য হলো! কি ছিল এই বইটিতে! 

নস্ত্রাদামাসঃ-


মধ্যযুগে একজন অখ্যাত ফরাসি ডাক্তারের নাম মাইকেল ডি নস্ত্রেদেম। ল্যাটিন ভাষা অনুসারে উচ্চারণ করলে নস্ত্রাদামাস। তিনি পুরনো জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের হিসেবে ১৫০৩ সালের ১৪ই ডিসেম্বর সেইন্ট রেমি ডি প্রোভেন্স এ জন্ম। ১৫০১ সালে যখন নস্ত্রাদামাসের বয়স ৯ বছর তখন রাজা দ্বাদশ লুই এর ঘোষণা অনুসারে সকল ইহুদিকে তিন মাসের মধ্যে ক্যাথলিক ধর্মে রূপান্তরিত হতে হবে।ফলে নস্ত্রাদামাসের পরিবার বাধ্য হয়ে ধর্মান্তরিত হয়। ধর্মান্তরিত না হলে অন্যত্র তাদের চলে যেতে হবে এই ভয়ে তারা এই পদক্ষেপ গ্রহন করে।
নস্ত্রাদামাস ছিলেন অদম্য মেধাবী। যে বয়সে শিশু কিশোর আনন্দে দৌড়ঝাপ,  খেলাধূলায় নিমগ্ন থাকে সেই বয়সে তিনি এতোটাই কৌতুহলী ছিলেন যে তিনি জ্ঞান অর্জনের জন্য সীমাহীন পড়ালেখা করতেন। জ্ঞান অর্জন যেমন নস্ত্রাদামাসের জন্য উপকারী ছিল ঠিক তেমনি বেশ অপকারীতাও ছিল। প্রশ্নটা হলো কেন?
মূলত জ্ঞান অর্জনের জন্য পরিবার তার উপর বেশ খুশিই ছিল, একি সাথে ভয়েও ছিল। তখন যারা ইহুদি থেকে খ্রিষ্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হয় তাদের উপর প্রশাসন বেশ কড়া নজরদারী রাখে। কারণ তখন একটি মতবাদ প্রতিষ্ঠা ছিল যাকে আমরা বলি কোপার্নিকাসের মতবাদ যে সূর্য পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরে। ক্যাথলিকের কথা হলো কেন শিক্ষিত জনগোষ্ঠী এটি মেনে নিবে না! এটি না মেনে যদি কেউ বলে সূর্য পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরে না তবে তার বিরুদ্ধে ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগ এনে হত্যাও করা হতো। কিন্তু নস্ত্রাদামাস তো চুপ থাকার বালক নয়, একে তার জ্যোতিষশাস্ত্রের প্রতি প্রবল আগ্রহ অন্যদিকে জ্ঞান আহরণ করে কোনটি সত্য এবং কোনটি মিথ্যা তা জানতে শিখেছে, তখন তার পরিবার তাকে নিয়ে খুব ভয় পেয়ে যায়।
 
মন্টিপেলিয়ার 
                        

অবশেষে অনেক জল্পনা কল্পনা শেষে তাকে ১৫২২ সালে মেডিসিনের উপর পড়াশোনার জন্য মন্টিপেলিয়ারে পাঠিয়ে দেন। তখনকার সেরা বিদ্যাপীঠ প্যারিস ইউনিভার্সিটি। তখনকার মেডিসিনের উপর অনার্স মাস্টার্স শেষ করবার পর এতো সহজে তাদের চাকরী হতো না। এর জন্য আরো কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হতো যার শেষ পরীক্ষা হতো বিনা গবেষণা এবং বিনা প্রস্তুতিতে। সেটিতে নস্ত্রাদামাস বেশ ভালো করেন। আবার একজন ছাত্রকে তখন এই পরীক্ষা দেবার পরও আবার পাঁচটি লেকচার দিতে হতো দেখার জন্য যে, প্রত্যেক ছাত্র কি প্রফেসরদের মতো মেধা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে কিনা। তাতেও নস্ত্রাদামাস সফল। ১৫২৫ সালে তিনি মন্টিপেলিয়ারের বিশপের হাত থেকে মেডিসিন প্র্যাক্টিসের লাইসেন্স তুলে নেন।


তখনকার মহামারী রোগ “লে চারবন”যা ছিল মূলত শরীরে কালো রঙের বড় বড় ফুসকুড়িতে ভরে যাওয়া রোগ, তার সফল চিকিৎসা প্রদানে সক্ষম ছিলেন। তিনি মানবিক ভাবে বেশ উদার ছিলেন এবং বিনা মূল্যে চিকিৎসায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি সেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন ১৫২৯ সালে। তার সুনাম এতো যে তিনি অপ্রচলিত ঔষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে বহু রোগীকে সারিয়ে তোলেন। এতে করে তার এতো সুনামের পরও তার অনেক শত্রুর সৃষ্টি হয়। ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জনের পর তাকে প্রস্তাব দেওয়া হয় শিক্ষকতার জন্য। যোগ দেন সেই পেশায় কিন্তু টিকে উঠতে পারেন না। কারণ আশেপাশে বহু মানুষের সাথে তার বেশ শত্রুতার সৃষ্টি  হতে থাকে। নিজের অস্থির প্রকৃতির জন্য তিনি টিকে উঠতে পারেন না এবং দ্বিতীয়ত সেই সময় একটি ধারণার প্রচলন ছিল যে লে চারবনে আক্রান্ত শরীর থেকে কিছুটা রক্ত ফেলে দিলে রোগীর উপকার হয় এটিও মানতে তিনি নারাজ। ফলে বেশ বড় মাপের মতপার্থক্য দেখা  যায় এবং চাকরী ছেড়ে দেন।
দূর্ভাগ্য যে, যেই রোগকে তিনি খুব সহজেই এবং অসাধারণ উপায়ে সারিয়ে তোলেন সেখানে ১৫৩৭ সালে তার স্ত্রী এবং ছেলে নিজেরাই “ব্ল্যাক ডেথের” শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করে।
 


এই সময়ে তার জীবনে আরো দূর্ভাগ্য ঘটা শুরু করে। তার বিরুদ্ধে স্ত্রীর পরিবার থেকে মামলা করা হয় দুইবার। একবার মাতা মেরীর মূর্তি বানাবার সময় তিনি নাকি বলেছিলেন যে, শয়তান বানানো হচ্ছে আবার স্ত্রীর পরিবার থেকে যে যৌতুক নেওয়া হয়েছিল তার বিরুদ্ধে মামলা করে যৌতুকের টাকা ফেরত চাওয়া হয়েছিল তার কাছ থেকে। এতে করে এই ঘটনা ক্যাথলিক চার্চ পর্যন্ত গড়িয়ে যায় এবং নস্ত্রাদামাস ভীষন একা হয়ে পড়েন। সকল জায়গা থেকে তার বিচ্যুতি ঘটেন এবং অসহায় হয়ে পড়েন।
ইতালীর একটি ঘটনা। একদিন নস্ত্রাদামাস তার বন্ধু সহ একটি মাঠের পাশেই হেটে যাচ্ছিলো। তখন নস্ত্রাদামাসের চোখ পড়ে এক অল্পবয়সী শুয়োরের রাখালের উপর। নস্ত্রাদামাস তার দিকে হাসিমুখ নিয়ে এগিয়ে গিয়ে তার হাত ধরে চুমু খেয়ে বললো,”ইয়োর হোলিনেস”। এ দেখে তার বন্ধু দূর থেকে বোকা বনে গেলেন। নস্ত্রাদামাস এর মুখে যেন শ্রদ্ধার একটা হাসি,কেবল হাসছিলেনই! তার বন্ধু কারণ জানতে চাইলেন তার কাছে। নস্ত্রাদামাস বলেন, একদিন এই শুয়োরের রাখাল হবেন খ্রিষ্ট জগতের প্রধান,পোপ হবেন তিনি।সেই রাখালের নাম হলো ফেলিসি পেরেত্তি যিনি নস্ত্রাদামাসের মৃত্যুর প্রায় ত্রিশ বছর পরে ১৫৮৫ সালে তিনি পোপ সেক্সটাস পঞ্চম হয়েছিলেন।
নস্ত্রাদামাস পরিচিত হয়ে উঠছিলেন ভবিষ্যৎ বাদক হিসেবে। তাকে ছোটো বেলা থেকেই ক্ষুদে ভবিষ্যদ্বক্তা বলা হতো। একদিন ডি ফ্লোরিনভিল নামের এক স্বচ্ছল কৃষকের খামারবাড়িতে একবার কিছুদিনের জন্য নস্ত্রাদামাস ছিলেন। সেই কৃষক তার কাছ থেকে জানতে চাইলেন যে তার কাছে দুইটা শুয়োর কাছে সাদা এবং কালো। কার কি পরিণতি হবে? একটুও দ্বিধা এবং দেরী না করে উত্তর দিলেন কালোটা তার পেটে যাবে আর সাদাটা নেকড়ের পেটে। তার ভবিষ্যতদ্বাণী মিথ্যা প্রমাণ করার জন্য বাবুর্চিকে ডেকে এনে সাদা শুয়োরকে রাতে ভোজনের জন্য রান্নার নির্দেশ দেন। তার ঘরের একটু দূরে একটি পোষা নেকড়ে শাবক ছিল। বাবুর্চি রান্নার সময় অন্য মনস্কতার কারণে নেকড়ে সাদা শাবক শুয়োরের মাংসকে সাবাড় করে নেয় এবং কালোটা রান্না করতে বাধ্য হয় বাবুর্চি। কিন্তু তা জানে না ফ্লোরিনভিল। রাতে খেতে বসে ফ্লোরিনভিল জানালেন তারা সাদা শাবকের মাংস খাচ্ছেন। কিন্তু নস্ত্রাদামাস জোর দিয়ে বলেন, সাদা নয়, কালোটার মাংস এটা। ফ্লোরিনভিল সব এবার জানতে চাইলেন বাবুর্চির কাছ থেকে। সব খুলে বলে ফেলল সে!
এভাবে আস্তে আস্তে সে মেডিসিনের পথ থেকে সরে এসে গভীর ভাবে ভবিষ্যতদ্বাণী, জ্যোর্তিবিদ্যা ইত্যাদির দিকে মনোনিবেশ করতে থাকেন। ছোটবেলায় নস্ত্রাদামাস যে বিষয়ে বেশ পারদর্শী ছিলেন সে বিষয়ে খুব মনযোগ দেবার কারণে এখন বেশ নাম কুড়ানো শুরু করে দিয়েছেন। অতিপ্রাকৃত শক্তি যেন তার মগজে ভর করে বেড়াতো। তিনি চিন্তা করতে পারতেন প্রচুর এবং বলতেনও নির্ভুল

বিখ্যাত কিছু ভবিষ্যৎ বাণী সমূহ:




“ফরাসীদের ঐক্যহীনতা এবং অবহেলার কারণে
মোহামেডানের জন্য পথ উন্মুক্ত হয়ে যাবে।
সিয়েনার মাটি ও সাগর রক্তে ভেসে যাবে।মার্সেই বন্দর জাহাজ আর পালে ঢাকা পড়ে যাবে”
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
১৯৪০ সালের দিকে ফ্রান্সে যে বড় রকমের বাধা ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে তার কথা বলা হচ্ছে। সে সময় ইতালীয় বাহিনী ফ্রান্সের উপর দিয়ে উত্তর আফ্রিকায় যাবার জন্য মরিয়া হয়ে পড়েছিল এবং তাদের যেতেও দেওয়া হয়েছিল। মরুভূমির যুদ্ধে ইতালীয়ানদের রক্ত ঝরবে এই কথা নির্ভুল বলে দিয়েছেন নস্ত্রাদামাস। মার্সেই বন্দর তখন জার্মানীদের হাতে ছিল।

                          
                                                      
                                                        
“দাসত্বের শৃঙ্খলাবদ্ধ জনতার কন্ঠে গান,আনন্দধ্বনি আর দাবি উচ্চারিত হবে যখন যুবরাজ আর লর্ডরা কারাগারে বদি থাকবে। ভবিষ্যতে মস্তকবিহীন নির্বোধরা এসবকে ভবিষ্যৎ কথনের সাধনা হিসেবে গ্রহন করবে।“
ফরাসী বিপ্লব ১৭৮৯
রাজা ষষ্ঠদশ লুই যখন সপরিবারে টেম্পলে বন্দি দিন কাটাচ্ছিলেন,সাধারণ মানুষ তখন মুক্তির গান গাইতো আর দাবির উত্থান করতো।মস্তকবিহীন নির্বোধ বলতে যারা প্রথমদিকে বিপ্লবের নেতা ছিল,তাদের কথা বলা হচ্ছে।



“বোধহীন একটা কিছু চাতুরীর কাছে অস্তিত্ব হারিয়ে
নিজের সমাপ্তি ডেকে আনবে।অটান,চালান,ল্যাঙ্গার এবং দুই সেন্স
এ প্রবল শিল ও তুষারপাতের কারণে ব্যাপক ক্ষতি হবে”
বিরল মেডিকেল ঘটনা ১৬১৩
এর বাস্তব সমাধা পাওয়া যায় এবং বাস্তবেই পরিণত হয় গ্র্যান্সিয়ারেস-এ। তিনি ব্যাখ্যা করেন,এক মহিলার গর্ভ থেকে একটি পাথরের পরিণত ভ্রূণের অপারেশনের মাধ্যমে অপসারণ করা হবে। মহিলার নাম ছিল কলম্বিয়া। এটি বাস্তবে বিরল এই কারণে সে সময় এমন একটি অপারেশন করা কথাও একটা স্বপ্ন ছিল এবং অকল্পনীয়।এই উপরের পদ্যে যে সকল শহরের নাম উল্লেখ করা আছে সেগুলো ছিল ডাচি অফ বুরগ্যান্ডির অধীনে।আবহাওয়া সম্পর্কে যা বলা হয়েছে,সেটাও ঠিক ঠিক ঘটেছে।

“ফ্রান্সের বিভিন্ন যুদ্ধ এত বেশি সময় স্থায়ী হবে যে
তা কাস্টুলন রাজাদের রাজত্বকালের চেয়েও দীর্ঘ হবে।
এক অনিশ্চিত বিজয় তিন মহানকে মুকুট পরিয়ে দেবে- ঈগল,মোরগ, চাদ,সিঙ্ঘ,সূর্য তার ঘরে।”
স্প্যানিশ রাজতন্ত্রের পতন
চার্লস পঞ্চমের মৃত্যুর পর ফরাসি বিপ্লব এবং স্প্যানিশ সাম্রাজ্যকে নিয়ে লেখা নস্ত্রাদামাসের এই পদ্যটির অনেক সুচিন্তিত অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে। স্প্যানিশ রাজতন্ত্রের পতনের পর ফ্রান্স খুব বড় ধরণের যুদ্ধ সংঘটিত করে। যদিও কিছু স্প্যানিশ সম্রাট পদত্যাগ করেন এবং অন্যরা ক্ষমতাচ্যুত হন,তবে রাজতন্ত্রের সত্যিকারের পতন হয় নিশ্চয়ই ১৯২৩ সালে,যখন সে দেশে প্রজাতন্ত্র কায়েম হয়। তারপর আসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অধ্যায়। যে তিনিটি বৃহৎ শক্তি যে যুদ্ধে জয়ী হয় সেগুলো হচ্ছে আমেরিকা(ঈগল),ফ্রান্স(মোরগ) এবং ব্রিটেন(সিংহ)।জাপানকে আত্নসমর্পণের মধ্য দিয়ে ১২ আগস্ট যুদ্ধ শেষ হয়।

“ফ্রান্সকে তার পাঁচ অংশীদার অবহেলার দায়ে অভিযুক্ত করবে।
পার্সিয়ার জন্য তিউনিস,আলজিয়ার্স আলোড়িত হবে।
লিও,সেভিল,বার্সেলোনা ব্যর্থ।ভেনিসিয়ানদের কারণে নৌবহর পাবে না।”
মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের সংকট ও সমস্যা
এখানে একটি প্রাথমিক অর্থনৈতিক সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন নস্ত্রাদামাস।ফ্রান্সকে পাঁচ অংশীদার অবহেলার দায়ে অভিযুক্ত করবে।সে ভেড়ার মাংস আমদানী সম্পর্কিত কম মার্কেত রুলস ভঙ্গ করায় তারা ১৯৭৯-৮০ সালে ক্রুদ্ধ হবে। নস্ত্রাদামাস এটাকে আফ্রিকার ইরানীদের সৃষ্ট সমস্যার সাথে জুড়ে দিয়েছেন।
এটি ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে ইরানের আবার সম্পর্ক গড়ে তোলার একটি কৌতুহল জাগানোর সূত্র। নস্ত্রাদামাসের সময় ইরান অটোম্যান সাম্রাজ্যের অংশ ছিল,পরে সেটুকু রাশিয়ার মধ্যে চলে যায়। সে সূত্রে দেশটি সবসময় মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সমস্যায় নাক গলিয়েছে,তারা পছন্দ করুক আর না করুক।এই কথায় ইরানের উপর শীতকালে উত্তরদিক থেকে আক্রমণ আসার কথাও বলা হয়েছে।

“লেক লেমান কঠোর সমালোচনায় অতিষ্ট করে তুলবে।
দিন থেকে সপ্তাহ থেকে মাস,মাস থেকে বছরের পর বছর গড়াবে,তারপর
সব ব্যর্থ হবে।ম্যাজিস্ট্রেটরা তাদের অর্থহীন আইনকে ধিক্কার দেবে”
লীগ অফ নেশন
স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন যে, লেক জেনেভাকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা লীগ অফ নেশন্স অকার্যকর হয়ে পড়বে,হয়েছেও তাই।বছরের পর বছর অর্থহীন বিতর্ক আর ব্যর্থতার কারণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর,১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসে সেটাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়


তথ্যসূত্রঃ দ্যা প্রফেসিস অফ নস্ত্রাদামাস,এরিকা চিথাম(খন্ড ১,২,৩)

Comments

Popular posts from this blog

পোস্ট মর্ডানিজম :ভাবনাচিন্তা ও তত্ত্ব

মিশেল ফুকোঃ জ্ঞান,শৃঙ্খলা এবং ক্ষমতা

১৯ শতকে বাংলায় সমাজ সংস্করণ এবং ধর্ম সংস্কার